নাঃগঞ্জে রোজার প্রথম দিনে যানজটের যন্ত্রণা

প্রকাশ: ২৩:৫৪, ২ মার্চ ২০২৫ | আপডেট: ২৩:২৬, ৩ মার্চ ২০২৫

নাঃগঞ্জে রোজার প্রথম দিনে যানজটের যন্ত্রণা

রমজানের শুরুতেই ভজঘট !  জেলা প্রশাসন, পুলিশ ও নাসিক কর্তৃপক্ষ তৎপর। তবুও প্রথম রোজাতেই যানজটের দুর্ভোগ থেকে রেহাই পেলোনা নারায়ণগঞ্জ মহানগরীর বাসিন্দারা। শহরের প্রতিটি পয়েন্টে যানজটে রোজাদারদের ত্রাহি অবস্থা লক্ষ্য করা গেছে। ট্রাফিক পুলিশের কর্মকর্তারা জানালেন, সকাল ১০টা থেকেই শহর যেনো অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। শহরের প্রানকেন্দ্র ২নং রেলগেইট, কালিরবাজার মোড়, চাষাড়া নুর মসজিদ ও চাষাড়া গোলচত্বরে অটোরিক্সা, সিএনজি, যাত্রীবাহি বাস, পণ্যবাহী ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহনের জঞ্জাল চোখে পড়ে। দুপুরের পর বিকেলে যানজট কিছুটা কমেছিল।

যানজটের আটকা পড়েছিলেন বীরমুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব নুরউদ্দিন আহমেদ। তিনি এসেছিলেন শহরের প্রধান বাজার দ্বিগুবাবুর বাজারে। বাজারেও মানুষের ভিড়। বাজারের শেষে ফলপট্টি রেলগেইটে যানজটে আটকা পড়েছিলেন প্রায় একঘন্টা। তিনি জানালেন, রমজানের প্রথম দিনেই এমন যানজটে পড়ে মানুষ অতীষ্ঠ। নাসিক কর্তৃপক্ষ ও জেলা প্রশাসন ব্যর্থতার পরিচয় দিল।

নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটির সভাপতি এড. এবি সিদ্দিক বললেন, আমরা পবিত্র রমজানের আগেই জেলা প্রশাসন ও নাসিক কর্তৃপক্ষকে বলেছিলাম যানজটের বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে। তারা রুটিন মাফিক কিছু কাজ করেছে। কিন্তু সমস্যার মূলে যায়নি। নতুন নতুন নেতাদের শেল্টারে শহরে অটোরিক্সার দাপট। ফুটপাতে হকারদের পসরা। রাস্তায় যানজট মানুষ হাঁটাচলা করতে পারছেনা।

চাষাড়া মোড়ের খাজা সুপার মার্কেট এলাকার কয়েকজন পুরনো ব্যবসায়ী বললেন, এই খাজা মার্কেটের সামনের যায়গাটুকু কি রাস্তা নাকি ফুটপাত-বুঝতে পারিনা। খাজা মার্কেটের সামনের চত্বরে সারাদিন অটোরিক্সার দাপট। যেনো এটা অটোরিক্সার স্ট্যান্ড। ট্রাফিক পুলিশ দেখেও কিছু বলেনা। নতুন নতুন নেতাদের ভয়ে ট্রাফিক পুলিশ ঢিলেঢালা ডিউটি করে। অথচ পুলিশের কোন বড় কর্মকর্তা এলে সেদিন পুলিশ পুরো শহর কঠিন সিস্টেমে নিয়ে আসে। সেদিন শহরে যানজট থাকেনা। তার মানে পুলিশ এই শহরের সাধারণ মানুষের জন্য মনযোগী হয়ে কাজ করেনা। তারা ঢিলেঢালা ডিউটিতে অভ্যস্থ হয়ে উঠেছে। ফলে যানজট লেগেই থাকে। পুলিশ মুরগী তাড়ানোর মতই হুশ হুশ করে দায়িত্ব পালন করে।

নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক প্রতিবাদি সাংবাদিক রফিকুল ইসলাম জীবন বলেন, বাণিজ্যিক নগরী নারায়ণগঞ্জবাসী ভাল নেই। যানজট ও হকার সমস্যা নগরবাসীকে ভোগান্তিতে ফেলে দিয়ে দিয়েছে। নগরীর এন্ট্রি-এক্সিট পয়েন্ট চাষাড়া দিনের বেশির ভাগ যানজটে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। এতেকরে ব্যবসায়ীমহলকে ক্ষতির সম্মুখিন হতে হচ্ছে। চাষাড়া পপুলারের সামনে, কালিরবাজারে ফ্রেন্ডস মার্কেটের সামনে, ২নং রেল গেইটের সামনে রঙ রুটে গাড়ি চলছেই। অনেক সময় এরাই যানজট বাঁধায়। মাঝেমধ্যে মাঝ সড়কেই অনেকে বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে ঝগড়া শুরু করে, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। ৫ আগস্টের পর থেকে অনেকেই ট্রাফিক আইন মানেন না।

জানাগেছে, যানজট সমস্যায় বছর জুড়েই ভুগছে নগরবাসী। বঙ্গবন্ধু সড়ক, শায়েস্তা খাঁ সড়ক, নবাব সিরাজউদ্দৌলা সড়ক, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ পুরাতন সড়কসহ বিভিন্ন সড়কেই যানজটের দেখা মেলে। সড়কের সংস্কার কাজ, সড়কের পাশে অবৈধ পার্কিং, ফুটপাথ ও সড়কের হকারদের, সিএনজি-মিশুক-লেগুনার অবৈধ স্ট্যান্ডসহ নানা কারণে সড়কগুলোতে যানজটের সৃষ্টি হয়। তবে এই যানজট এড়িয়ে দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছাতে কৌশল অবলম্বন করেন অনেক যানচালক। সড়ক কিছুটা ফাকা দেখলেই সুযোগ পেয়ে উল্টোপথে যাতায়াত শুরু করেন। কিন্তু কিছু দূর যেতে না যেতেই সামনে থেকে আসা যানের সম্মুখীন হলেই থেমে যাচ্ছে। পাশ কাটিয়ে যাওয়ার চেষ্টায় যান চলাচলের পথ বন্ধ হয়ে আসছে, সৃষ্টি হচ্ছে যানজট।

 

সম্পর্কিত বিষয়:

আরও পড়ুন