ব্যবসায়ীকে না পেয়ে মেয়ে, জামাই ও ম্যানেজারকে জিজ্ঞাসাবাদ

বাংলাবাজার বার্তা ডেস্ক :

প্রকাশ: ০০:৫৭, ১৪ জানুয়ারি ২০২৫

ব্যবসায়ীকে না পেয়ে মেয়ে, জামাই ও ম্যানেজারকে জিজ্ঞাসাবাদ

দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে কিছু ব্যতিক্রম ঘটনাও ঘটছে। নগরীর পাইকারী ব্যবসায়ী এলাকা নিতাইগঞ্জে একটি ঘটনায় ব্যবসায়ী মহলে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।  খেলাপি ঋনের মামলায় পাট ব্যবসায়ীকে না পেয়ে ব্যবসায়ীর মেয়ে, মেয়ে জামাই ও ম্যানেজারকে এগারো ঘন্টা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে নিয়ে আটকে রেখেছিল পুলিশ। আটকের সময় জেলা গোয়েন্দা পুলিশ সাদা পোশাকে ছিল। মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, এটা স্পষ্টই আইন ও মানবাধিকার লঙ্ঘন।  

ঘটনার ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার বলেন, আব্দুল আলী মোটা অংকের ঋন খেলাপি। তাকে ধরার জন্য উপর মহলের চাপ রয়েছে। তাই তার ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহ করতে এই তিনজনকে আনা হয়েছিলো। পরে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।

নগরীর নিতাইগঞ্জ এলাকার শারমিন জুট বেলার্স এর মালিক আব্দুল আলি। তার আইনজীবি ও নারায়ণগঞ্জ জেলা গনতান্ত্রিক আইনজীবি সমিতির সাধারন সম্পাদক আওলাদ হোসেন জানান, আব্দুল আলি এক সময় অত্যন্ত ভালো ব্যবসায়ী ছিলেন। কিন্তু উনি নানা কারনে ব্যবসায়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে কমার্স ব্যাংকের নারায়ণগঞ্জ শাখার ঋন খেলাপি হন। আদালত থেকে তাকে গ্রেফতারে ওয়ারেন্ট রয়েছে। তাই তিনি পালিয়ে রয়েছেন। পালিয়ে থেকে তার অন্য সম্পত্তি বিক্রি করে দেনা শোধের চেষ্টা করছেন।

তার দেনার শতগুনেরও বেশি মুল্যমানের সম্পত্তি বন্ধক রয়েছে ব্যাংকের কাছে। তার বাড়ি নগরীর বঙ্গবন্ধু সড়কের জিমখানা এলাকায় সিটি কর্পোরেশনের উল্টোদিকে। পুলিশ একাধিকবার এই বাড়িতে অভিযান চালিয়েও তাকে পায়নি। তাকে না পেয়ে ডিবি পুলিশ ১৩ জানুয়ারী ভোররাত পাঁচটায় ঢাকার বাড্ডায় তার মেয়ের জামাই এ টি এম পারভেজ সাজ্জাদ এর নিজস্ব বাসায় অভিযান চালায়। সেখান থেকে ব্যবসায়ী আব্দুল আলির মেয়ে শারমিন আক্তার, তার স্বামী এ টি এম পারভেজ সাজ্জাদ ও নগরীর দেওভোগের বাসা থেকে শারমিন জুট মিলের ম্যানেজার জামান আহমেদকে আটক করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ।

তাদের নগরীর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে অবস্থিত জেলা গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয়ে আটকে রাখা হয়। সোমবার বিকেল চারটায় তাদের মুচলেকা রেখে ছাড়া হয়। তাদের বিরুদ্ধে কোনো ওয়ারেন্ট নেই। পুলিশ সাদা পোশাকে কোথাও অভিযান চালাতে পারবেনা বলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নির্দেশ দিয়েছেন। এরপরেও এ ধরনের ঘটনায় পুলিশের স্পষ্টই কোনো অসৎ উদ্দেশ্য আছে।

এ ব্যাপারে মানবাধিকার সংগঠন বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের ঢাকা দক্ষিনের সমন্বয়ক এডভোকেট মাহবুবুর রহমান মাসুম বলেন, এটা সম্পূর্ণ মানবাধিকার লঙ্ঘন। বাবার অপরাধে মেয়েকে, মেয়র জামাইকে, ম্যানেজারকে আটক করে আনা যায়না। একজন নারীকে গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয়ে ওয়ারেন্ট ছাড়া এগারো ঘন্টা আটকে রেখে পুলিশ ন্যাক্কারজনক উদাহরন তৈরী করেছে। যেখানে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সাদা পোশাকে পুলিশকে কোথাও যেতে নিষেধ করেছেন সেখানে তাদের এই অতি উৎসাহ কেন তা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন।
 

সম্পর্কিত বিষয়:

আরও পড়ুন