দুর্ধর্ষ মাদকের ডিলার বিটুর মাদক সাম্রাজ্যের নিয়ন্ত্রণে যারা
বাংলা বাজার বার্তা
প্রকাশ: ১৪:১১, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যূত্থানে আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের পর পালিয়ে গেছে নারায়ণগঞ্জ শহরের দক্ষিনাংশের দুর্ধর্ষ শীর্ষ মাদক সম্রাট ও ভুমিদস্যু বিটু ওরফে সালাউদ্দিন বিটু।
কিন্তু সে পালিয়ে গেলেও তার বিশাল মাদকের সাম্রাজ্য নিয়ন্ত্রণ করছেন শ্যালক রাকিব ও তার অনুসারীরা। চলছে মাদকের রমরমা বাণিজ্য। এছাড়াও ছিনতাই, চাঁদাবাজী, ভুমিদস্যুতাসহ সকল অপকর্ম করছে এই বাহিনীর বিরুদ্ধে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, মাদক ব্যবসায়ী মিঠু, আল আমিন, অমিসহ সাঙ্গপাঙ্গদের নিয়ে মাদক ব্যবসাসহ বিটুর সকল অপকর্মের হাল ধরেছে তারই শ্যালক রাকিব।
তারা বলছেন, শামীম ওসমানের বেয়াই ফয়েজ উদ্দিন লাভলু ও মুন্নার শেল্টারে ছিচকে মাদক বিক্রেতা থেকে মাদকের বিশাল সাম্রাজ্য গড়ে তোলে বিটু। একাধিকবার র্যাব ও পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়া বিটু জেলার সবচেয়ে বড় মাদক সম্রাট হিসেবেই পরিচিত ছিলো।
পাশাপাশি, মানুষের জমি দখল, ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী কর্মকান্ড সবই করতো সে। শামীম ওসমানের বেয়াই লাভলুর শেল্টারে গত কয়েক বছর শহীদ নগর ও গোগনগর এলাকায় ব্যাপকভাবে ভুমিদস্যুতা চালিয়ে প্রচুর অর্থ-বিত্তের মালিক বনে গেছে মাদকের সম্রাট বিটু।
এতো কিছুর পরও ঐ দুই নেতার শেল্টারে বারবার আইনের হাত থেকে রক্ষা পায় সে। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শ্যালক রাকিব, মিঠু, আল আমিন, অমিসহ বিশাল বাহিনী নিয়ে অস্ত্র হাতে হামলা চালায় ছাত্র-জনতার উপর।
ছাত্র আন্দোলনে ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে হাসিনা সরকারের পতন হলে গাঁ ঢাকা দেয় এই বিটু ও তার শেল্টারদাতারা। এরই মাঝে, ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের স্বজনরা বেশ কয়েকটি মামলা করে তার বিরুদ্ধে। তবে, এখনো বহাল তবিয়তে আছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলাকারী, মাদক ব্যবসায়ী রাকিব, মিঠু, আল আমিন, অমি ও তাদের সাঙ্গপাঙ্গরা।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, বিটু পালিয়ে গেলেও রাকিব ও তার অনুসারীদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ ১৮নং ওয়ার্ডের শহীদনগর, ডিয়ারা, সুকুমপট্টি, তামাকপট্টি, নলুয়া, মুসলিম নগরসহ গোগনগর ও আশেপাশের সকল এলাকার জনসাধারণ। তারা বলছে, বিটু পালিয়ে যাওয়ায় এলাকাবাসী বেশ খুশী ছিলো।
কেননা, মাদকের ভয়াল হাত থেকে যুবসমাজ এবার রক্ষা পাবে বলে তারা ধারণা করেছিলো। কিন্তু বিটুর শ্যালকের নেতৃত্বে মাদক সিন্ডিকেট গড়ে তুলে নতুন করে মাদক ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে সর্বত্র। শুধু মাদকই নয়, নিরীহ মানুষের জমি দখল, ছিনতাই-চাঁদাবাজিতেও ওস্তাদ এই বাহিনী।
১৮নং ওয়ার্ডবাসী ও গোগনগরবাসীকে বাঁচাতে বিটুর মাদক সাম্রাজ্য উৎখাত ও তার শ্যালকসহ বাহিনীর সকলকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী। শীঘ্রই যৌথ বাহিনীর অভিযান পরিচালনার মাধ্যমে মাদকের এই ভয়াবহতা থেকে এলাকাবাসীকে মুক্তি দেয়ার আহবান জানান।
এ বিষয়ে সেনাবাহিনী, পুলিশ, র্যাব-১১ নারায়ণগঞ্জ ক্যাম্প সহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী।
প্রসঙ্গত: ২০২০ সালের ৪ মার্চ রাত ১০টার দিকে তামাকপট্টি এলাকা থেকে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানা পুলিশের একটি টিম বিটুকে গ্রেফতার করে। ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি সালাউদ্দিন বিটুর সেকেন্ড ইন কমান্ড বুইট্টা সুজন, শাহীন ও আরিফকে ৬০০ ইয়াবাসহ আটক করে সদর মডেল থানা পুলিশ। এরপর গা-ঢাকা দেন বিটু। পরও তিনি আবারও এলাকায় ফিরে আসেন।
২০১৭ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি রাতে ৫০০ ইয়াবাসহ তামাকপট্টি এলাকার শুক্কুর মিয়ার রিকশার গ্যারেজ থেকে ডিবির হাতে গ্রেফতার হন বিটু। জামিনের বেরিয়ে আসার পর আবারো একই বছরের ১৯ আগস্ট তাকে সাড়ে ৩০০ ইয়াবাসহ থেকে গ্রেফতার করে ডিবি। বিটু এর আগেও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কদমতলী থানায় সাড়ে ৫০০ বোতল ফেনসিডিলসহ গ্রেফতার হন।