আমরা লড়েছি সংসদ নির্বাচনের জন্য : মির্জা আব্বাস
মির্জা আব্বাসের আগমনে নারায়ণগঞ্জ বিএনপি চাঙ্গা
বাংলাবাজার বার্তা ডেস্ক :
প্রকাশ: ২৩:৫৫, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | আপডেট: ০০:৫৪, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

জননেতা মির্জা আব্বাস নারায়ণগঞ্জ ঘুরে গেলেন। তাঁর আগমনে জেগে উঠলো নারায়ণগঞ্জ বিএনপি। প্রাচ্যেরডান্ডি নারায়ণগঞ্জে জামায়াতের সাথে রাজনৈতিক দৌড়ে পিছিয়ে পড়া বিএনপি নেতাদের মনের দুঃখ বেদনা কিছুটা হলেও লাঘব হল মেট্রো সিনেমা হল এলাকার বিশাল সমাবেশের মধ্যে দিয়ে। স্থানীয় বিএনপি নেতৃবৃন্দ তৃপ্তির ঢেকুর তুলতে না পারলেও স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। তাঁরা বলছেন, তবুওতো কিছুটা হল। লাখো নেতাকর্মীদের বড় অংশটি চাঙ্গা হয়েছে এ কথাটুকু অন্তত বলা যায়।
২৫ ফেব্রুয়ারীর সমাবেশে মির্জা আব্বাস স্থানীয় ও জাতীয় নির্বাচন ছাড়া তেমন বিশেষ কিছু বলেনি। তবে নারায়ণগঞ্জ জেলার প্রভাবশালী ও পুরনো নেতারা বলছেন, সবেতো শুরু হল। বিএনপি আগামী দিনগুলোতে মাঠে সজাগ থাকবে। ষড়যন্ত্র রুখবে।
সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, আমরা আন্দোলন লড়াই করেছি গণতন্ত্র ও সংসদ নির্বাচনের জন্য। স্থানীয় সরকার নির্বাচনের জন্য লড়াই করিনি। ঘোড়ার আগে গাড়িতে উঠতে হয় না। যারা আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন চাচ্ছেন, তাদের এই চাওয়া উদ্দেশ্যমূলক। তাদের এই উদ্দেশ্য ষড়যন্ত্রমূলক। দেশে এখন অনেক ষড়যন্ত্র হচ্ছে, আর এই ষড়যন্ত্র হচ্ছে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের জন্য। গ্রামে গঞ্জে অনেকের পায়ের তলার মাটি নেই, স্থানীয় সরকার নির্বাচন করে তারা পায়ের তলার মাটি করতে চাচ্ছে।
গতকাল মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে শহরের মেট্রোহল মোড়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সমাবেশে অংশ নিয়ে একথা বলেন তিনি।
মির্জা আব্বাস বলেছেন, শেখ হাসিনা তো পনেরো বছর ক্ষমতায় ছিল ভোট ছাড়া। আপনারাও থাকুন, আমরা না করবো না। কিন্তু মানুষ আপনাদের ছাড় দিবে না। আমরা গণতন্ত্র চাই, আমরা কথা বলতে চাই। দরকার হলে বলে দেন বাংলাদেশে আর নির্বাচনের প্রয়োজন নেই। আপনারা সংস্কারের কথা বলে কান ঝালাপালা করে ফেললেন। কী সংস্কার করেছেন জানি না। ফতুল্লায় স্বেচ্ছাসেবক নেতা মামুনকে হত্যা করা হয়েছে গুলি করে কয়েকদিন আগে। আমি এ ঘটনায় দোষীদের আইনের আওতায় আনার দাবী জানাচ্ছি।
তিনি বিশেষভাবে বলেন, আমরা জেনেছি বিডিআর হত্যা হয়েছিল বাইরের একদল প্রশিক্ষিত ও প্রাতিষ্ঠানিক লোকদের দিয়ে। তারা এদেশে থাকে না। তারা বিদেশ থেকে এসে আমার দেশের ৫৭ জন সেনা সদস্যকে হত্যা করেছে। তাদের বিচার হয়নি। যাদের বিচার হয়েছে তারা আসলে নির্দোষ। জেলে তাদের দেখে আমরা আমাদের অশ্রু ধরে রাখতে পারিনি। আমি তাদের পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানাই।
যারা জেলে আছে তাদের ব্যাপারে কোন কথা শুনতে চাই না। তারা বিগত পনেরো বছর ধরে জেলে পঁচে মরছে। তাদের কেন ছাড়া হচ্ছে না আমরা জানি না। আমরা চাই তাদের অবিলম্বে মুক্তি দেয়া হোক।
আমাদের দেশের অবস্থা খুব খারাপ। ডাকাতি, ছিনতাই বেড়ে গেছে৷ কারা করছে আপনারা জানেন। যারা বলে দিনের বেলা আমরা হাঁটতে না পারলে রাতে ওদের ঘুমোতে দিবো না। কারা বলে এ কথা দিল্লী বসে। যারা এদেশের সর্বনাশ করে ভারতে বসে আছে তারাই চক্রান্ত করছে কীভাবে এ দেশকে অশান্ত করা যায়।
এদেশের মানুষের ঐক্যকে আপনারা ভাঙতে পারবেন না। এদেশের মানুষ শান্তি চায়। মানুষ বাঁচতে চায়। আপনারা আমাদের রাতে শান্তিতে ঘুমোতে দিবেন না, লুটপাট করবেন, আগুন দিবেন বলেছেন আপনারা। চেষ্টা করে দেখুন, মানুষ আপনাদের এত সহজে ছেড়ে দিবে না।
বিএনপি অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি দল। এ জনপ্রিয়তাকে ধ্বংস করতে একশ্রেনীর লোক মাঠে নেমেছে। বিএনপির জনপ্রিয়তা দেখে কতিপয় ব্যাক্তি বিএনপি আওয়ামী লীগের মত হয়ে গেছে বলে। বিএনপিকে ভারতের দালাল বলে। বিএনপি কখনও ভারতের তাঁবেদারি করেনি। ভারতের তাঁবেদারি করলে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান আজ জীবিত থাকতেন।
জনসভায় আরও উপস্থিত ছিলেন, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ, ১ম যুগ্ম আহ্বায়ক হয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দিপু, যুগ্ম আহ্বায়ক মাশুকুল ইসলাম রাজিব, শরীফ আহমেদ টুটুল, সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খান, সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপু, জেলা যুবদলের আহ্বায়ক সাদেকুর রহমান সাদেক, সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনিসহ বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা।